ডেস্ক নিউজ:

ভারী বর্ষণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাঁচ জেলায় পাহাড় ধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৩ জনে দাঁড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রাঙামাটিতে ১০৩ জন, চট্টগ্রামে ৩১, বান্দরবানে সাত, কক্সবাজারে দুই, খাগড়াছড়িতে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে চার সেনা সদস্য রয়েছেন।

সোমবার রাত থেকে ভারী বর্ষণে চট্টগ্রাম, রাঙামাটি ও বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার ভোর থেকে রাত এবং আজ বুধবার পর্যন্ত মোট ১৪৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

অতিবর্ষণের কারণে সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামের আট উপজেলায় অধর্শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কয়েক হাজার মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ এবং স্থানীয়রা বুধবার সকাল থেকে ফের উদ্ধার অভিযান শুরু করেছেন। তবে যেসব এলাকায় ধসের ঘটনা ঘটেছে এর বেশ কয়েকটি দুর্গম হওয়ায় উদ্ধারকাজ পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়েছে।

রাঙামাটি:
রাঙামাটির বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসে চারজন সেনা সদস্যসহ ১০৩ জন নিহত হয়েছে। রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান ১০৩ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন।

রাঙামাটি শহরের সবচেয়ে বেশি পাহাড় ধস হয় ভেদেভেদি, রাঙ্গাপানি, যুব উন্নয়ন এলাকা, টিভি স্টেশন, রেডিও স্টেশন, মানিকছড়ি ত্রিমৌহনী, শিমুলতলি, রাজমনি পাড়া, রিজার্ভ বাজার, তবলছড়ি এলাকায়। এ ঘটনা বিচ্ছিন্নভাবে কমপক্ষে পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর নষ্ট হয়।

চট্টগ্রাম:

ভারী বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন স্থানে মোট ৩০ জন নিহত হয়েছেন। চট্টগ্রামের চন্দনাইশ ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় এই ঘটনা ঘটে। এর মধ্য রাঙ্গুনিয়েতেই নিহত হয় ২১ জন। চন্দনাইশ উপজেলার ধোপাছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোরশেদুল আলম এ হতাহতের ঘটনা নিশ্চিত করেছেন। উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামাল হোসেনও এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বান্দরবানে সাতজনের মৃত্যু

এই পাহাড়ি জেলায় এখন পর্যন্ত সাতজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে প্রশাসন। ভারী বর্ষণে সোমবার দিবাগত রাতে জেলার কালাঘাটা, আগাপাড়া ও জাইল্লাপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। বান্দরবান ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা স্বপন কুমার ঘোষ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহতদের মধ্যে আছে শহরের আগাপাড়ার একই পরিবারের শুভ বড়ুয়া, মিঠু বড়ুয়া, লতা বড়ুয়া ও কালাঘাটা কবরস্থান এলাকার রেবি ত্রিপুরা। জাইল্লাপাড়ায় একই পরিবারের মা কামরুন্নাহার ও মেয়ে সুফিয়া। অন্যদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

খাগড়াছড়িতে দুজনের মৃত্যু

সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বর্ষণে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতেও পাহাড় ধসে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার খাগড়াছড়িতে দুইজনের মৃত্যু হলেও খবর পাওয়া যায় বুধবার সকালে।

খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ ইকবাল জানান, উপজেলার দুর্গম বর্মাছড়ি ইউনিয়নে মঙ্গলবার ভোরে পাহাড় ধসের দুটি ঘটনায় দুইজনের মৃত্যু হয়।